শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং
বাংলাদেশ থেকে অনেকেই বিভিন্ন সেক্টরে ফ্রিল্যান্সিং করলেও Accounting &Bookkeeping sector এ freelancer খুব ই কম,কিন্তু উন্নত দেশ গুলোতে প্রচুর Bookkeeper এর চাহিদা আছে,বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রচুর ( প্রায় ৫০ হজার) ছেলেমেয়ে, BBA,MBA,MBS, করে বের হচ্ছেন,একটু চেষ্টা আর পরিশ্রম করলেই কিন্তু ফ্রিল্যান্স Bookkeeper /Accountant হিসেবে ক্যারিয়ার ডেভেলপ করা যায়। এজন্য cloud Bookkeeping টা আয়ত্ত করতে পারলেই সহজেই এই প্রফেশনে আসতে পারেন।


আমি এ খাতে আমার অভিজ্ঞতা টুকু দেশের তরুণ ফ্রি ল্যান্সারদের জন্য শেয়ার করতে চাই,যদি কারো উপকারে আসে।


কারো কিছু জানার থাকলে চেষ্টা করব উত্তর দিতে,যদি আমার জানা থাকে।


ধন্যবাদ।


আমার মতে এ পেশায় আসার জন্য দুটি জিনিস প্রয়োজন

১.থিওরিকাল নলেজ 

২.টেকনিক্যাল স্কিল।


প্রশ্ন হচ্ছে থিওরিক্যাল নলেজ কতটুকু দরকার?


এর উত্তর হচ্ছে বেসিক নলেজে কোন ধরনের ঘাটতি থাকা যাবে না।


অত্যন্ত দু;খের সাথে বলতে হয়,স্নাতকোত্তর পাশ করার পরেও অনেকের কাছে ডেবিট ক্রেডিট কন্সেপ্ট ক্লিয়ার না,একাঊন্টিং সাইকেল বোঝেন না,জারনালে এ অনেকের সমস্যা আছে।


কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে এসব বিষয় আয়ত্ত করার জন্য উচ্চতর পড়াশুনার দরকার নাই।আমাদের দেশের ইন্টারমিডিয়েট লেভেল সিলেবাস যথেষ্ট।


নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর থিয়রী বুঝার চেষ্টা করুন।


১.ডাবল এন্ট্রি


২.ব্যানক রিকনসিলিয়েশন


৩.ট্রায়াল ব্যালান্স


৪.ভ্যাট একাউন্ট


৫.একাউন্টিং সাইকেল।


এই বিষয়গুলো এস এস সি/এইচ এস সি সিলেবাস থেকে ভাল করা বুঝার চেষ্টা করুন।


আরেকটি বিষয় এ লেখা থেকে এমন কোন ম্যাসেজ আমি দিতে চাচ্ছি না যাতে মনে হয় এ প্রফেশনে আসলে আপনি রাতারাতি লাখ লাখ টাকা কামাবেন।


আর দশটি পেশার মত ই এটি একটি পেশা মাত্র।অন্য সব পেশার মত ই এখানে উত্থান পতন আছে, আছে কঠোর পরিশ্রমের প্রয়োজনীয়তা।


সবচেয়ে বড় কথা এটি এখন নলেজ,স্কিল,এন্ড টেক্নোলজি ভিত্তিক প্রফেশন।


যদি আপনি নিয়মিত নিজেকে আপডেট রাখতে না পারেন,সংখ্যাভীতি থাকে,বা প্রযুক্তির প্রতি অনীহা থাকে


তাহলে আপনার সাফল্য নিয়ে আমার সংশয় আছে।


এতটুক পড়ার পরও যারা হতাশ হোন নি,তারা পড়তে থাকুন।


আমি জানি আপনারা অপেক্ষায় আছেন,কি কি পোগ্রাম শিখতে হবে তা জান তে।


কিন্তু আমি বলব 'ব্যাক টু বেসিক'


আপনার একাঊন্টিং নলেজ টুকু ভালমত ঝালাই করুন।


ভাবছেন, ভাই একি কথা বারবার বলছেন কেন?,আমি বিবিএ বা এম বি এ, আমাদেরকে কি বেকুব মনে করেন?


না অবশ্য ই না।


সব ছাত্র সমান না,কিন্তু বাংলাদেশে ব্যক্তিগতভাবে যে কজনের সাথে কাজ করেছি অধিকাংশ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা সূখকর নয়।


মনে রাখবেন আপনি যে মাঠে খেলতে নামছেন, সেখানে আগে থেকেই মাঠে আছে ভারত,পাকিস্তান,ফিলিপাইন, সহ অসংখ্য দেশ।


আপনার প্রিপারেশনটাও সেই লেভেলের হতে হবে।


যুদ্ধে নামবেন ঠিক করেছেন,আসুন এবার আমরা এবার দেখি কি কি যুদ্ধাস্ত্র লাগবে,।


একাউন্ট্যাসি অনেক বড় জগত,এখানে অনেক ধরনের সেবা আছে,


আজকে আমি ফোকাস করব বুক কিপিং নিয়ে,আমি যেহেতু ইউ কে থাকি,উদাহারণ হিসেবে এখানের কথাই বলি,


এখানকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলো একি সম য়ে দুইজন প্রফেশনালের সাহায্য নিয়ে থাকেন,Bookkeeper & Accountant.


এখানে bookkeeping & Accountancy দুটি আলাদা প্রফেশন।


বুক কিপাররা ট্রায়াল ব্যালেন্স এ গিয়ে থামেন আর ওখান থেকেই একাউন্ট্যান্ট খেলা শুরু করেন।


Chartered Accountants রা সাধারণত বুক কিপিং করেন না।


BK দের৷ কাজ কে আপনি বলতে পারেন, ইটের পর ইট সাজিয়ে তারা একাঊন্টস এর ভিত্তি বানান,ইট সিমেন্টের গাথুনি হয়ে গেলে বিল্ডিং কে নান্দনিক করা


CA এর কাজ।


পুরো একাউন্টস কোয়ালিটি র তারতম্য হবে BK এর কাজ অনুসারে।


CA &Bookkeeper রা আলাদা রেগুলেটিং বডি থেকে লাইসেন্স নিয়ে প্র্যাক্টিস করে থাকেন,বলা বাহুল্য তাদের কাজের মান কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।


আচ্ছা কেউ কি আমাকে জানাতে পারবেন,গত ৪৭ বছরে বাংলাদেশে কতজন লাইসেন্স হারিয়েছেন,কাজের কোয়ালিটির কারণে,আমার জানা নেই, ইউকে তে প্রতি মাসে অসংখ্য একাউন্ট্যান্ট লাইসেন্স হারান কাজের গাফেলতির জন্য।


আমেরিকা,কানাডা সহ উন্নত দেশগুলোতে এই চিত্র কম বেশী একি রকম।


ভাবছেন, ধান ভানতে শীবের গীত গাইছি কেন।


জেনেশুনে এই গীত গাইছি, এ সব দেশের কাজের মান টা বোঝানোর জন্য,আর এটার ইফেক্ট কি সেটা ধারণা দেয়ার জন্য।


যুদ্ধে নামার আগেই রণক্ষেত্রের চিত্র টা দেখে নিন।


তো এই CA & Bookkeeper রা ই হবে আপনার কাজ পাওয়ার বড় সূত্র।


কি ধরনের কোয়ালিটি কাজ এরা চায় কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছেন আশা করি।


CA & BK দের সাথে কাজের অভিজ্ঞতা এ পেশায় আপনাকে শক্ত ভিত্তি দিবে।


কোম্পানি গুলিও সরাসরি প্রচুর কাজ দেয়। অনেকেই সরাসরি কোম্পানিগুলোর সাথে কাজ করেন, তবে


এ ক্ষেত্রে কাজ শিখার সুযোগ সীমিত।


এবার আসুন আমাদের প্রয়োজনীয় অস্ত্রগূলো যোগার করে নিই,সঠিক অস্ত্র বেছে নেয়া জরুরী।


আপনি ভাবলেন শিখব ই যখন কামান চালানো ই শিখি,লাভ নাই খেলাটা হল রিভলবারের কামান চালানো কাজে আসবে না।


প্রত্যেক টা কাজে কিছু জিনিস আছে বেসিক, এগুলো নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই।যেমন সাইকেল চালাতে গেলে পা লাগবে এটা সবাই জানে।


এখানে তেমনি ইংলিশ আর এক্সেল লাগবে,এটা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই।


আর বাকি টুলস গুল আগামী সপ্তাহে লিখব,ইনশাআল্লাহ।


আমি জানি অনেকেই বিরক্ত হচ্ছেন লম্বা প্যাচাল দেখে,


আমি বলব সবর, এগূলো জানা দরকার।


আসুন এবারে আমরা দেখি কি কি প্রোগ্রাম দরকারী,


ইংলিশ আর এক্সেল এর কথা আগেই বলেছি তো সেদিকে আর যাচ্ছি না।


মূল কথায় যাওয়ার আগে একটা কথা বলে নেই অনেকে মনে করেন,আগে কাজ পেয়ে নেই,তারপর শিখব কাজও শিখা হবে,প্র্যাক্টিস ও করা হবে।


এ কাজটা করবেন না,এটা ভুল ধারণা।


আমি বলব ৯৯৯% শিখা না হলে কাজ নেবেন না।


এটা প্রফেশনাল জগত,শটকার্ট টাকা কামানোর রাস্তা না।


আপনি যখন না জেনে কাজ করেন,তখন পুরো দেশের ক্ষতি করেন,জি পুরো দেশের।


আপনার কাজের কারণে পূরো দেশের ফ্রিল্যান্সার সম্পকে খারাপ ধারণার জন্ম নেয়।


আমরা প্রথম থেকেই কথা বলছিলাম Cloud Accountancy নিয়ে।


একেত্রে অসংখ্য প্রোগ্রাম আছে,তবে সবগুলোর মূলনীতি গুলো একইরকম।


এখন জনপ্রিয় বা ইউজার ফ্রেন্ডলী কিছ প্রোগাম হল


1.Quick Book online


2.Xero


3.kashflow


4.Sage


5.Freshbook


এর মধ্য QB এবং XERO er এর গ্রাহক সংখ্যা প্রায় যথাক্রমে ২ লক্ষ এবং ১ লক্ষ।


তো যদি আপনি শুধু এ দুটি প্রোগ্রাম রপ্ত করতে পারেন আশা করা যায় আপনি, ব্রিটেন,কানাডা,আমেরিকা , এবং মধ্যপ্রাচ্য থেকে নিয়মিত কাজ পাবেন।


এখন প্রশ্ন হল কি শিখবেন,কোথায় শিখবেন।


কি শিখবেনঃ (বুক কিপিং এর জন্য প্রাইমারী ফ্রি ল্যান্সারদের জন্য)


একটা একাউন্টস ট্রায়াল ব্যালেন্স পযন্ত কিভাবে প্রিপেয়ার করতে হয় এটা অবশ্যই জানতে হবে।


সাথে ভ্যাট রিটার্ন প্রিপারেশন, পে রোল।


এগুলো হল বেসিক জিনিস,এগুলো জানতেই হবে।


মনে রাখবেন, ইনভয়েস আর বিল এন্ট্রি শিখেই মনেই করবেন না শিখা হয়ে গেছে,কারণ এ কাজগুলো এখন প্রায় ক্ষেত্রে Third Party application সাহায্য করা হয়।


পরে আমি একটা সিলেবাস গাইড লাইন হিসেবে দিব।


মনে 


এখন প্রশ্ন হচ্ছে কোথায় শিখবেন,ঃ


যদি প্রয়োজন হয় কারও কাছে শিখতে পারেন।


তবে ভাল অপশন হচ্ছে তাদের ওয়েবসাইট থেকে শিখা।


1.Xero.com


2.Intuit.com


দুটোই এক মাসের জন্য ফ্রি একাউন্ট দেয়।সেখানে প্রচুর ভিডিও আছে,দেখবেন এবং ফ্রি 


একাঊন্টে প্র্যাক্টিস করবেন।


এছাড়া ইউটিউব তো আছেই।


অনলাইনে প্রচুর প্র্যকটিস ম্যাটেরিয়াল পাওয়া যায়।


আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা হল প্রতি প্রোগ্রামের জন্য ৬০/৭০ ঘন্টা প্র্যাকটিস করলে ভিত্তি টা হয়ে যাবে।


প্রতিদিন ৪/৫ ঘন্টা করলে ২ সপ্তাহ


প্রতিদিন ২/৩ ঘন্টা করলে ৪/৫ সপ্তাহ


শিখার পর কোন অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্স একাঊন্যান্ট এর সাথে অন্তত ৬ মাস কাজ করুন।


আর প্রোগ্রামগুলো প্রতিমাসে নতুন ফীচার আপডেট করে, সেটা আপডেট থাকুন।


যাদের সুযোগ আছে, তারা কোন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিখতে পারেন,তবে এক্যাউন্ট্যাসি যেহেতু গুরুমুখী বিদ্যা, প্রফেশনাল এক্যাউন্ট্যান্ট এর কাছে শিখতে পারলে ভাল হয়।


ব্যাস হয়ে গেলে আপনার প্রাথমিক প্রস্তুতি, এবার শুরু করে দিন।


ভাই শিখলে কাজ পাব? এই ধরনের নেতিবাচক চিন্তাভাবনা থেকে বের হয়ে আসুন,কাজ শিখুন।


এই লেখাগুলোতে একেবারেই প্রাথমিক ধারণা দেয়া হয়েছে, ভবিষ্যতে কি কি সেবা দেয়া যায় সেটা নিয়ে বিস্তারিত লিখার ইচ্ছে আছে।



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।


Nizam Uddin, Principal, FinTech Accountancy Service , UK

ফেসবুক থেকে সংগ্রহীত

Please note that the content, videos and images used in this blog may have been taken from various websites/books. We share them for your valuable content, others' benefit. However, if you have any objections, please let us know. Your content will be removed.
insurance bd,Online education,insurance,Online education, bkash,nagod,mobile banking bd